মক্কার পথ, লেখক মুহাম্মদ আসাদ ছিলেন একজন ইহুদি। নাম ছিল লিওপোল্ড লুইস। জন্ম ১৯০০ সালে, পোল্যান্ডের লেমবার্গ শহরে। তাঁর দাদা ছিলেন ইহুদিদের রাব্বি বা ধর্মীয় পণ্ডিত। হলে কী হবে, কিশোর বয়সেই— লুইস যখন সবেমাত্র ভালো মন্দ বুঝতে শিখেছেন, তখনই তিনি তাঁর ধর্মের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন! লুইস তাঁর বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাশ্চাত্যের তথাকথিত আধুনিকতার প্রতি ভীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন। তাদের বাহ্যিক জাঁকজমকের অন্তরালে লুকায়িত অতলগর্ভ শূন্যতা তাঁর সামনে উদ্ভাসিত হয়ে যায়।একসময় পেটের দায়ে সাংবাদিকতা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। একটা সংবাদপত্রের প্রতিনিধি হিসেবে পাড়ি জমান বর্তমান ফিলিস্তিনে। সেখানে তিনি আরব মুসলিমদের চালচলন ও ধর্মকর্ম দেখে বিমুগ্ধ হন। তিনি আবিষ্কার করেন, ট্রেডিশনাল মুসলিম সমাজের মধ্যে রয়েছে মন ও ইন্দ্রিয়ের এক সহজাত সঙ্গতি— ইউরোপ যা ইতোমধ্যেই হারিয়ে ফেলেছে! তিনি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করেন, ইউরোপের জনমনে আজ যে হাহাকার অনিশ্চয়তা আর অবিশ্বাস, মুসলিমদের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও নেই। তাঁরা বরং প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস আর হৃদয়ের প্রশান্তিতে ন্যুব্জ!
ইসলামের প্রতি তাঁর আকর্ষণ ও ভালো লাগা থেকেই ১৯২৬ সালে ইউরোপে ফিরে সস্ত্রীক ইসলাম কবুল করেন। তাঁর মুসলিম নাম হয় মুহাম্মদ আসাদ। মক্কার পথ তাঁর এক বিস্ময়কর সফরনামা। তাঁর রূহানি আত্মজীবনী! বইটিতে তিনি তাঁর সেই সফরের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, তখনকার আরবদের জীবনধারা, আরব বেদুইনদের চালচলন যেমন চিত্তাকর্ষক গল্পের ভাষায় বর্ণনা করেছেন, তেমনি তুলে ধরেছেন সত্যসন্ধানী এক অতৃপ্ত হৃদয়ের সত্যোপলব্ধির মর্মস্পর্শী কাহিনি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস